চুঁচুড়া ও হুগলি ইমামবাড়া (CHUCHURA AND HOOGHLY IMAMBARA)
(STORY)
- প্রথম পর্ব -
চুঁচুড়া, হুগলি চকবাজার ও বাশঁবেড়িয়া(অনিবার্য কারণবশত বাঁশবেড়িয়া যাওয়া হয়নি) - আজকের গন্তব্যস্থল এবং নানা ঘটনার সাক্ষী আমার এই ছোট্ট সফরটি। আমার এই সফরের সঙ্গী ছিল আমার অত্যন্ত প্রিয় বুকান চ্যাটার্জী দাদা। আমাদের ঘোরার বর্ণনা দেবার আগে হুগলি জেলার অন্তর্গত এই চুঁচুড়া শহরটি সম্বন্ধে কিছু কথা বলি। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার একটি শহর ও পৌরসভা এলাকা হল চুঁচুড়া। চুঁচুড়ার থেকে চুঁচড়ো নামটিই চলে কথ্য ভাষায়। এটি হুগলি জেলার সদর দপ্তর। হুগলি ও চুঁচুড়ার ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় যে হুগলি শহরটি ছিল পর্তুগিজ দের অধীনে এবং চুঁচুড়া ছিল ওলন্দাজ দের অধীনে। অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী এই দুই শহরই দখল করে ও পরে ১৮৬৫ সালে এই দুই প্রশাসনিক অঞ্চল কে এক করা হয়।
দুপুর ১২:৫৫, হাওড়া স্টেশন থেকে ব্যান্ডেল লোকালে চড়ে বসলাম আমি আর বুকান দা। এক ঘন্টার কাছাকাছি রাস্তা। ট্রেন ছাড়ল ১ বেজে ৫ মিনিট নাগাদ। বুকান দার সাথে আমি একটু বেশিই বকবক করি। যার ফলে আমরা কখন চুঁচুড়া স্টেশনের কাছে চলে এলাম তার খেয়ালই ছিল না। আমার মোবাইলে থাকা রেলের application টি না জানালে হয়ত আমি জানতেও পারতাম না। যাই হোক, যখন আমরা চুঁচুড়া স্টেশনে নামলাম তখন সময় হয়েছিল ১:৫২। স্টেশনের বাইরে থেকে ১৫ টাকা ভাড়ায় টোটো রিক্সা ধরে সোজা চলে গেলাম আমাদের প্রথম গন্তব্যস্থল আর্মেনিয়ান চার্চ দর্শনে। আগেই বলেছি আমাদের এই ছোট্ট সফরটি ছিল নানা ঘটনায় ভরপুর। এর মধ্যে প্রথম ঘটনাটি হল আর্মেনিয়ান চার্চে ঢুকতে না পারা। স্টেশন থেকে চার্চ টোটো রিক্সা তে ১৫ মিনিট। আমরা চার্চের সামনে এসে দেখি চার্চের প্রধান দরজা ভেতর থেকে তালা দেওয়া। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর চার্চের সিকিউরিটি গার্ড দরজা খুলল বটে কিন্তু আমরা ঢুকতে পারলাম না। আমাদের জানানো হল যে কলকাতার বড়বাজার থেকে আগে চার্চ ঘোরার অনুমতি পত্র নিয়ে আসতে হবে তারপরই আমরা চার্চ ঘুরতে পারব। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও যখন আমাদের ঢুকতে দেওয়া হল না তখন চার্চের বাইরের অংশেরই কিছু ছবি তুললাম। চার্চের ইতিহাস ঘাটলে জানতে পারি চুঁচুড়ার শেষ ডাচ্ গভর্নর ড্যানিয়েল অ্যান্টনি ওভারবেক এই চার্চের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। ১৮২২ খ্রিষ্টাব্দে সোফিয়া বাগ্ৰামের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং তার স্বামীর স্মরণে এই চার্চের সুউচ্চ চূড়াটি নির্মাণ করেন। যা এখনও বর্তমান।
যাইহোক,আমরা এবার বেরিয়ে পড়লাম পরবর্তী গন্তব্যস্থল Dutch Cemetery বা ওলন্দাজ কবরস্থান বা গোরস্থান দেখবার উদ্দ্যেশ্যে। এপ্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি চুঁচুড়ায় Dutch Cemetery 'গোরস্থান' নামেই সকলের কাছে অধিক পরিচিত। চার্চ থেকে ২২ মিনিটের হাঁটা পথে চুঁচুড়া শহরের মধ্যস্থল ঘড়ির মোড় পেরিয়ে পৌঁছে গেলাম গোরস্থানে। কলকাতার south park street cemetery তে ঢুকতে যেখানে টিকিট কাটতে হয় সেখানে এই ওলন্দাজ কবরস্থানটিতে ঢুকতে কোনো টিকিট কাটতে হয় না। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব জায়গাটিকে অধিগ্ৰহণ করলেও একপ্রকার অনাদরেই আছে এই ঐতিহাসিক স্থানটি। তবে আমার ঘোরা cemetery গুলোর মধ্যে এই dutch cemetery টি অনেক বেশি গোছানো ও সুন্দর। এই ওলন্দাজ কবরস্থানটিতে আছে ৪৫ টি ডাচ্ কবর। এটি ১৮-১৯ শতাব্দীতে খুবই সক্রিয় ছিল। এখানে সবচেয়ে প্রাচীন সমাধিটি স্যার কর্নেলিয়াশ জঙ্গের, যিনি ১৭৪৩ খ্রিষ্টাব্দে চুঁচুড়ায় মারা যান। আমরা এখানে ৩৫ মিনিট এরও বেশি সময় মতো থেকে, ঘুরে ও ছবি তুলে বেরিয়ে পড়লাম আমাদের পরবর্তী গন্তব্যস্থলের উদ্দ্যেশ্যে।
Continue..........
দ্বিতীয় বা শেষ পর্ব :-
https://photographyakc.blogspot.com/2018/06/chuchura-and-hooghly-imambara_29.html![]() |
প্রধান দরজার পাশে থাকা আর্মেনিয়ান চার্চের ফলক। |
![]() |
প্রধান ফটক। আর্মেনিয়ান চার্চ। |
![]() |
সোফিয়া বাগ্ৰামের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত চার্চের সুউচ্চ চূড়া। |
![]() |
ঘড়ির মোড়। চুঁচুড়া শহরের মধ্যস্থল। |
![]() |
ওলন্দাজ কবরস্থান। |
![]() |
১ অন্দরমহল। ওলন্দাজ কবরস্থান। |
![]() |
২ অন্দরমহল। ওলন্দাজ কবরস্থান। |
![]() |
৩ অন্দরমহল। ওলন্দাজ কবরস্থান। |
![]() |
৪ অন্দরমহল। ওলন্দাজ কবরস্থান। |
![]() |
৫ অন্দরমহল। ওলন্দাজ কবরস্থান। |
![]() |
৬ অন্দরমহল। ওলন্দাজ কবরস্থান। |
![]() |
৭ অন্দরমহল। ওলন্দাজ কবরস্থান। |
![]() |
৮ অন্দরমহল। ওলন্দাজ কবরস্থান। |
![]() |
৯ অন্দরমহল। ওলন্দাজ কবরস্থান। |
![]() |
১০ অন্দরমহল। ওলন্দাজ কবরস্থান। |
DATE : 18.11.2017
PLACE : CHUCHURA & HOOGHLY IMAMBARA, HOOGHLY, WEST BENGAL, INDIA
No comments:
Post a Comment